সাহেব-বাজার ডেস্ক: ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় নতুন এক পদ্ধতির পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বানর ও ইঁদুরের ওপর পরীক্ষামূলক চিকিৎসা চালিয়ে পদ্ধতিটির সাফল্য নিশ্চিত হয়েছেন তারা। চূড়ান্ত পর্যায়ে সাফল্য পেলে এটি হবে মানব শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস দমনের প্রথম কোনো চিকিৎসা। খবর এএফপির।
ডেঙ্গু মশাবাহিত রোগ। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এ ভাইরাস অনেক দেশে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা নেই। ভাইরাসটি প্রতিরোধে দুটি টিকা আবিষ্কৃত হলেও অনেক দেশই তা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে কাজের সময় দুই বছর আগে দেখা যায় গবেষণাগারে তৈরি ‘জেএনজে ১৮০২’ নামে একটি যৌগ ইঁদুরের কোষে ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম। এবারে সেই যৌগটি আরও উন্নত করা হয়েছে। আর তা দিয়ে বানরের শরীরে পরীক্ষায় সাফল্য পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের
অধীনে পরিচালিত জ্যানসেন কোম্পানিজের ইমার্জিং প্যাথোজেনস বিভাগের প্রধান মার্নিক্স ব্যান লক বলেন, বানরের ওপর জেএনজে-১৮০২ প্রয়োগের ফল ‘খুবই উৎসাহব্যঞ্জক’। যৌগটি উচ্চমাত্রায় প্রয়োগ করে দেখা গেছে, তা ভাইরাসটির বিস্তার পুরোপুরি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন। এর মধ্যে দুটি ধরনে আক্রান্ত বানরের শরীরে জেএনজে-১৮০২ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জানান মার্নিক্স ব্যান লক। তিনি বলেন, ধরন দুটি প্রতিরোধে বানরের শরীরে যৌগটি প্রয়োগ করা হয়, চিকিৎসার জন্য নয়। তবে ইঁদুরের শরীরে ভাইরাসের চারটি ধরন প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যৌগটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গুর দুটি টিকা হলো ডেংভ্যাক্সিয়া ও কিউডেঙ্গা। এর মধ্যে ডেংভ্যাক্সিয়া কয়েকটি দেশে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। তবে এই টিকা মাত্র একটি ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকর। অন্যদিকে গত ডিসেম্বরে কিউডেঙ্গার অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দোনেশিয়া সরকারও টিকাটি ব্যবহারের সবুজ সংকেত দিয়েছে।
সাধারণত কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তার শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এটি ভবিষ্যতে আবার ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। তবে অনেকের শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়। এর ফলে তারা আবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। আর পরেরবার ডেঙ্গুর উপসর্গগুলো আরও মারাত্মক হতে পারে। একইভাবে জেএনজে ১৮০২-এর মাধ্যমে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করা হলে পরবর্তীতে ফের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে কবে নাগাদ বাস্তবে এই চিকিৎসা শুরু হতে পারে, সে ব্যাপারে আগাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ব্যান লক।
এসবি/এমই