টাকা পাচারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বিকল্প নেই


টাকা পাচার একটি বৈশ্বিক প্রবণতা হলেও দরিদ্র ও ভঙ্গুর অর্থনীতির বাংলাদেশের পক্ষে এর দায় বহন করা দুরূহ। বাণিজ্যের আড়ালে প্রতিবছর বিপুল অর্থ পাচার হচ্ছে। যখন বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সূত্রে এসব পাচারের খবর বেরিয়ে আসে কিংবা বাজারে ডলার সংকট দেখা দেয়, তখন সরকারের নীতিনির্ধারকরা কিছু বাণী দেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। এর পর সবকিছু আগের মতো চলতে থাকে বা চলতে দেওয়া হয়।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্র বলছে- গত কয়েক বছরে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ছাড়াও প্রতারণা এবং ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮’ ধারায় দেশের ২৩ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৬৭৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে ৯৫টি মামলা করেছে সরকারের একাধিক সংস্থা। শিল্পের যন্ত্রপাতি, মালপত্র ও কাঁচামাল আমদানিসহ বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে দেশ থেকে এসব টাকা পাচার হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন- দেশের বাইরে যখন টাকা পাচার হয়, তখন কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম বেড়ে যায় এবং দেশের মুদ্রা অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে।

পাচার রোধের প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ হলো অবৈধ অর্থের উৎসগুলো যথাসম্ভব বন্ধ করা এবং যারা এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে তাদের কর্মকা-ে তা প্রতীয়মান হয় না। দ্বিতীয়ত, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পাচারে নিরুৎসাহিত হবেন।

অর্থপাচারের দায়ে যারা ধরা পড়েছেন, তাদের যথোচিত শাস্তি হোক- এটাই কাম্য। একই সঙ্গে যারা নানা কারসাজির মাধ্যমে অর্থপাচার করে ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন, তাদের আইনের আওতায় দ্রুত আনার চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে।

 

এসবি/এমই